মিশেল ফুঁকো ও উত্তর আধুনিক চিন্তাকাঠামো


urlবিশিষ্ট দার্শনিক ও উত্তর আধুনিক চিন্তাধারার অন্যতম পুরোধা মিশেল ফুঁকো ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দের ১৫ অক্টোবর ফ্রান্সের Poitiers নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। ফ্রান্সের বিশিষ্ট সার্জন পল ফুকো ছিলেন তাঁর বাবা। বাবা তাঁর নাম রেখেছিলেন পল-মিশেল ফুকো, সেই সাথে ইচ্ছা ছিল জ্ঞানচর্চা শেশে ফুঁকো বাবার মতো চিকিৎসক হবেন। শিক্ষাজীবনের প্রাথমিক সময় বেশ ভালোভাবে কাটতে থাকে তার। তবে তাঁর প্রতিভার বিকাশ লক্ষ করা যায় বিখ্যাত জেসুইট কলেজ সেন্ট-স্টানিসলাসে ভর্তির পর। পড়াশোনায় বিশেষ সাফল্য তাঁকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ফ্রান্সের মানবিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মক্ষেত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান École Normale Supérieure
– এ প্রবেশের সুযোগ করে দেয়। তবে এখানকার জীবন ফুকোর জন্য ছিল বেশ কষ্টকর। নানা কারণে তিনি প্রচণ্ড অবসাদগ্রস্ততা ও হতাশায় ভুগতে থাকেন। একসময় মানসিক বৈকল্য তাকে মনোচিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে বাধ্য করে। তিনি এরপর হটাৎ মনোবিজ্ঞানে বিশেষ আগ্রহী হন।

অসাধারণ মেধাবী ফুঁকো দর্শনের ছাত্র হয়েও মনোবিজ্ঞানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ডিগ্রি লাভ করেন, তখন ফ্রান্সে যার উদাহরণ ছিল বিরল। মনোবিজ্ঞানের ক্লিনিক্যাল আর্মের সাথে যুক্ত থাকাকালীন তাঁর সাথে Ludwig Binswanger-এর মত বিখ্যাত চিন্তাবিদের পরিচয় লাভের সুযোগ হয়। সেই সময়ের ফ্রান্সের অধিকাংশ নরমালিয়েন এর মতো ১৯৫০ সালে ফুঁকো ফরাসি সমাজতান্ত্রিক দলে যোগ দিয়েছিলেন। École Normale Supérieure-এর সদস্যদের তখন নরমালিয়েন নামে ডাকা হতো। ফুঁকোর সমাজতান্ত্রিক দলে যোগ দেয়ায় কাজে উৎসাহ যোগান তাঁর শিক্ষক ও আধ্যাত্মিক গুরু লুইস আলথুসার ( Louis Althusser)।

তবে সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ১৯৫৩ সালে দল থেকে ইস্তেফা দিয়েছিলেন তিনি। তিনি রাশিয়ায় স্টালিনের অধীনে সম্পাদিত কিছু অন্যায় মেনে নিতে পারেননি।

মিশের ফুঁকোর কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় কাটে নানা গবেষণা ও শিক্ষকতা করে। ১৯৫০ সালে agrégation সম্পন্ন করার পর ফুকো École Normale- এ অল্প সময়ের জন্য কাজ করেন। এরপর ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত তিনি লিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। লিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করার সময় ১৯৫৪ সালে তাঁর প্রথম বই Maladie mentale et personnalité প্রকাশিত হয়েছিল। তবে বইটি তাঁর রচিত নয় বলে তিনি দাবী করেছিলেন। একসময় তিনি শিক্ষকতা পেশার প্রতি আস্থা হারিয়ে ফ্রান্স থেকে দীর্ঘ সময়ের জন্য স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান। বিশেষ করে ১৯৫৪ সালে সুইডেনের উপশালা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্রান্সের একজন সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করেন ফুঁকো। তাঁর বন্ধু Georges Dumézil তাকে এই কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এরপর ১৯৫৮ সালে তিনি উপশালা ছেড়ে চলে আসেন। অল্প কিছু সময় তাঁকে পোল্যান্ডের ওয়ারশ ও জার্মানির হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যলয়ে শিক্ষকতা করতে দেখা যায়।

পি.এইচ. ডি করার উদ্দেশ্যে ১৯৬০ সালে তিনি আবার ফ্রান্সে ফিরে আসেন। এবার Clermont-Ferrand বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনের একটি পদে চাকরি নেয়ার পর তার জীবন অন্যদিকে মোড় নেয়। এখানে তাঁর সাথে পরিচয় ঘটে Daniel Defert যিনি জীবনের বাকিটা সময় ফুঁকোর সাথেই কাটিয়েছেন। তবে তাদের non-monogamous পারিবারিক সম্পর্ককে অনেক বিশ্লেষক নৈতিকতার চরম অধঃপতন ও মানবিকতার স্খলন বলে মনে করেন। পি. এইচ. ডি লাভের উদ্দেশ্যে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী তিনি দুটি পৃথক গবেষণাপত্র জমা দেন। Folie et déraison: Histoire de la folie à l’âge classique নামের প্রধান অভিসন্দর্ভের পাশাপাশি অন্যটি ছিল “অ্যানথ্রোপলজি ফ্রম আ প্র্যাগমেটিক পয়েন্ট অব ভিউ”। Folie et déraison: Histoire de la folie à l’âge classique নামক মূল অভিসন্দর্ভটি ম্যাডনেস অ্যান্ড সিভিলাইজেশন নামে ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়।

সময়ের সাথে সাথে ফুকোর রচনার সংখ্যা বাড়তে থাকে। তিনি তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবনে অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে।

1. Madness and Civilization (1961)
2. The Order of Things : An Archaeology of Human Sciences (1970)
3. The Archaeology of Knowledge (1972)
4. The Birth of Clinic (1973)
5. Discipline And Punish: The Birth of the Prison (1975)
6. The History of Sexuality (1978)

মিশেল ফুঁকো ও সমসাময়িক কিছু তাত্ত্বিকের হাত ধরেই দার্শনিক জগৎ প্রবেশ করে উত্তরাধুনিকতায়। বিশেষ করে ফুঁকোর পাশাপাশি জাক দেরিদা, রোলাঁ বার্থ, এলেন সিকস, জুলিয়া ক্রিস্তেভা, লুস ইরুনদবর প্রমুখের নাম বলা যেতে পারে। মিশেল ফুকো একাধারে কিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন অন্যদিকে রয়েছে প্রচুর গবেষণা প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও বিশেষ ধরণের মন্তব্য। ফুঁকো সম্পর্কে বিস্তৃত আলোচনা করা হয় দর্শন বা নৃবিজ্ঞানে। এই গ্রন্থে স্বল্প পরিসরে মিশেল ফুঁকোর চিন্তাধারা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। বিশেষ করে উত্তর-আধুনিক চিন্তাধারা কিভাবে ইতিহাস রচনাকে প্রভাবিত করেছে তা বোঝার জন্য মিশেল ফুঁকো সম্পর্কে ধারণা থাকাটা জরুরী। বিশেষ করে ক্ষমতা প্রশ্নে ফুঁকোর চিন্তাধারা ইতিহাস রচনার ক্ষেত্র গুরুত্ব সহকারে বিবেচিত হওয়ার দাবি রাখে। ফুঁকো ক্ষমতা সম্পর্কে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে কয়েকটি বিষয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করেন। ফুঁকোর দৃষ্টিতে এই বিষয়গুলো পরস্পর আন্তসম্পর্কিত। বিষয়গুলো হচ্ছে-

১. ক্ষমতা কিভাবে সৃষ্টি হচ্ছে ও কোথা থেকে সৃষ্টি হচ্ছে
২. ক্ষমতার প্রয়োগ কিভাবে কোথায় করা হচ্ছে
৩. ক্ষমতার এই প্রয়োগ কতটুকু ন্যায়সঙ্গত

এই প্রশ্নগুলো উত্থাপন করার মাধ্যমে মিশেল ফুঁকো প্রচলিত সামাজিক-সাংস্কৃতিক বাস্তবতার সামনে একটি জ্ঞানদীপ্ত বিদ্রোহের দেয়াল তুলতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর দৃষ্টিতে কোনো বিষয়ই দৈবভাবে নির্ধারিত হয়না, এগুলো ক্ষমতার প্রভাবে হতে বাধ্য হয়। প্রসঙ্গত এই ক্ষেত্রে উত্তর-উনবিশেশিক কাউন্টার ডিসকোর্সের প্রবক্তা এডওয়ার্ড সাইদের মন্তব্যের মিল রয়েছে। সাইদ ক্ষমতা ও জ্ঞানের বিশ্লেষণ করেছেন অনেকটা এইভাবে। তিনি দেখিয়েছিলেন জ্ঞান পশ্চিমের সকল কাজকে বৈধতা দিয়ে তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। তারা উপনিবেশ স্থাপন করছে, জ্ঞানের মাধ্যমে তা যৌক্তিক করে তুলছে। সেই সাথে ধীরে ধীরে এই উপনিবেশ ক্রমশ সম্প্রসারণবাদে পরিণত হচ্ছে যার একটি জ্ঞানতাত্ত্বিক পাটাতন রয়েছে।

সাইদ যেখানে প্রতিটি রাজনৈতিক অপকর্মের পেছনে বিদ্যমান জ্ঞানতাত্ত্বিক প্রেক্ষাপটকে কঠোর সমালোচনা করেছেন। বুদ্ধিভিত্তিকভাবে তার সাথে ফুঁকোর মিল থাকলেও চিন্তাজাগতিক দিক থেকে ফুঁকো ছিলেন সাইদ থেকে অনেক ভিন্ন। বিশেষ করে সমাজের প্রতিটি স্তরে ক্ষমতার বিস্তৃতি খুঁজতে গিয়ে ফুঁকোর চিন্তায় শৃঙ্খলা আর শৃঙ্খল একীভূত হয়ে যায়। সঙ্গত কারণেই ফুঁকো অনেক সামাজিক অপকর্মের স্বপক্ষে সাফাই গাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। তবে একটি ক্ষেত্রে ফুঁকোর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তিনিই প্রথম ক্ষমতার সর্বত্র বিস্তৃতিকে তুলে ধরেছেন। তাঁর দৃষ্টিতে মার্কসবাদীদের মতো অর্থনীতিতেই ক্ষমতা সীমাবদ্ধ নয় এটির বিস্তৃতি ঘটেছে সর্বত্র। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, কারখানা আর জেলখানার গণ্ডি পেরিয়ে এই ক্ষমতার বিস্তৃতি পরিবার পর্যন্ত।

ফুঁকো দেখাতে চেষ্টা করেছেন ক্ষমতা একদিকে যেমন সর্বজনস্বীকৃত জ্ঞান তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে এই সর্বজনস্বীকৃত জ্ঞান প্রচলিত ক্ষমতাকেও বৈধতা প্রদান করে থাকে। তবে ফুঁকোর এই চিন্তা অনেক ক্ষেত্রে নৈরাশ্যবাদের জন্ম দিতে পারে। প্রশ্ন জাগতে পারে ক্ষমতার এই বলয় থেকে কি কোনো সময়ই মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয় ? প্রলেতারিয়েত, সাবঅলটার্ন বা নিম্নবর্গ যাই বলা হোক না কেনো একটি শ্রেণি কি সবসময়ই নিষ্পেষিত হবে। ফুঁকো এই প্রশ্নগুলো নিজেকেই করেছিলেন এবং তার উত্তর দিতে চেষ্টা করেছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তিনি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুজে পেলেও অনেকক্ষেত্রে যৌক্তিকতা স্পষ্ট করতে পারেননি। তবে তিনি মনে করেন চিরবিদ্রোহী আর নিরন্তর সমালোচনাকারী হতে পারেন ইতিহাসের মূল চরিত্র।

মার্কসবাদীরা যেখানে ক্ষমতাকে দমনের হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত করেই কাজে ক্ষান্ত দিয়েছেন। তবে ফুঁকোর চিন্তাধারা ছিল আরো অনেক বেশি বিস্তৃত। ক্ষমতার একটি ঐতিহাসিকতা রয়েছে যা ফুঁকোর দৃষ্টিগোচরে এসছিল। যেমন, শ্রেণিবিভক্ত সমাজে নিম্নশ্রেণি উচ্চশ্রেণির হাতে সব সময় নিষ্পেষিত হয়। এখানে অর্থনৈতিক অবস্থান রাজনৈতিক ক্ষমতার মানদণ্ডে পরিণত হয়। উদাহরণ হিসেবে সোভিয়েট রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিকতাকে একটি সামগ্রিক ক্ষমতা হিসেবে অভিহিত করা যায়। তবে পাশ্চত্যের অন্য সব পুঁজিবাদী দেশের ক্ষমতাকে বিশেষ শ্রেণির হাতে পুঞ্জিভূত থাকার কথা বলে মার্কসবাদীরা তাকে প্রত্যাখ্যান করে থাকেন। কিন্তু ক্ষমতা প্রয়োগের সেই সুনির্দিষ্ট কৌশলকে প্রত্যেকেই বেশ দক্ষতার সাথে এড়িয়ে গেছেন।

ক্ষমতার উৎস, প্রয়োগের ক্ষেত্র ও প্রয়োগের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ প্রসঙ্গে ফুঁকোর আলোচনার একটি কেন্দ্রবিন্দু ছিল। এখানে তিনি অভিযোগ করেছেন সবাই বিষয়টিকে সুকৌশলে এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করে। বিশেষ কর উদারনৈতিক চিন্তাবিদ ও মার্কসবাদীরা এই ফোকাল পয়েন্ট থেকে বের হয়ে তাদের আলোচনা এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এই ধরণের ক্ষমতার সঞ্চারপথ বিষয়ক আলোচনা লক্ষ করা যায় এন্টেনিও গ্রামশীর রচনায়।

আধুনিক যুগের প্রারম্ভে ও মধ্যযুগের ইউরোপে শাস্তির বিধান ছিল খুবই ভয়ানক। মিশেল ফুঁকো প্রথমত এই ধরণের মারাত্বক কিছু শাস্তির উদাহরণ টেনেছেন। শেষে তিনি দেখিয়েছেন রাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা আর গণতন্ত্রে শাস্তির বিধান এক নয়। এখানে রাজতন্ত্রে শাস্তিবিধানের লক্ষবস্তু ছিল মানুষের দৈহিক আক্রমণ কিন্তু গণতন্ত্রে শাস্তি অনেকটাই মনস্তাত্ত্বিক। রাজার ক্ষমতাকে সর্বময় করত যেমন দেবত্ব আরোপ করা হতো তেমনি রাজার আদেশ অমান্য করা স্রষ্টার আদেশ অমান্য করার মতো অপরাধ মনে করা হতো। এখানে তাই শাস্তির মাত্রাটাও ছিল অনেক ভয়াবহ। কঠোর ও পৈশাচিক শারিরীক শাস্তির বিধানকে নানা তন্ত্রমন্ত্রের সাথে যুক্ত করে অনেকটা উৎসবের চেহারা দেয়া হতো। এখানে সৃষ্ট আনুষ্ঠানিকতার একটি আলাদা উদ্দেশ্য ছিল। এর মাধ্যমে মানুষ যেনো ভবিষ্যতে এহেন কর্মসাধন না করে তা নিশ্চিত করা হতো। যার উদাহরণ হিসেবে ক্যাথলিক ধর্মের প্রসার ঘটাতে ও ধর্মবিপ্লব রোধ করতে বর্বর স্প্যানিশ ইনকুইজিশনের কথা বলা যেতে পারে। প্রথমত ধর্মদ্রোহ দমন করার জন্য ইনকুইজিশন গঠিত হলেও পরবর্তিকালে এই আদালত পরিণত হয় রাজার ক্ষমতা প্রকাশ করার একটি মারাত্বক যন্ত্র হিসেবে।

আধুনিক যুগে প্রত্যাবর্তনের পর বিশেষ করে গণতান্ত্রিক শাসন কাঠামোতে রাজার প্রভাব নেই। তবে ক্ষমতার সেই প্রভাববলয় ছিন্ন করা সম্ভব হয়নি। এখানে আইন-আদালত, রাষ্ট্র, সংবিধান ও কারাগারের লেবাছে সেই রাজার ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকৃত হয়েছে, বিনষ্ট হয়নি। এখন আর পূর্বের মতো চাবুক মারা হয়না, অগ্নিদহন, গিলেটিন, পাথর নিক্ষেপ, অন্ধকূপে নিক্ষেপ, শূলে বিদ্ধ করা, মাটিতে পুঁতে তিল তিল করে হত্যা করার মতো ঘটনাগুলো ঘটেনা ঠিকই। কিন্তু গণতন্ত্রের লেবাছ ফাঁসির মতো শাস্তিকে এখনো বন্ধ করতে পারেনি। এখানে ব্যক্তির স্বার্বভৌমত্বে বিশ্বাসের কথা বলা হলেও একদিকে মানুষের স্বার্বভৌমত্বকে গ্রাস করে নেয়া হয়েছে। ইতিহাস রচনার সময় বিষয়গুলো চিন্তাকাঠামোতে স্থান দিলে ইতিহাস রচনা অনেক বেশি প্রাঞ্জল, বস্তুনিষ্ঠ ও যুক্তিযুক্ত হয় উঠবে। ১৯৮৪ সালের ২৫ জুন উত্তর-আধুনিকতার অন্যতম দার্শনিক মিশেল ফুঁকো মারা যান।

521798_4093945918607_559959955_n

তথ্যসূত্র:
১. ইতিহাস ও ঐতিহাসিক, এ কে এম শাহনাওয়াজ ও মো. আদনান আরিফ সালিম, প্রতীক, ২০১৩।
২. আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস, এ কে এম শাহনাওয়াজ ও মো. আদনান আরিফ সালিম, নভেল পাবলিশিং হাউজ, ২০১৩।
3.The Order of Things: An Archaeology of the Human Sciences, Michel Foucault, 1966.
4.Discipline and Punish: The Birth of the Prison, Michel Foucault, 1975.

মন্তব্য করুন